শ্রীমতি ললিতা সখী(অষ্টসখীর প্রধান)

Dvarakajivana Dasa
0
শ্রীমতি ললিতা সখী

শ্রীরাধারাণীর কায়ব্যূহস্বরূপিণী প্রিয় অষ্ট নর্মসখীগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠা হচ্ছেন ললিতা। অন্য নাম অনুরাধা। ললিত দৃষ্টি, ললিত কণ্ঠ, ললিত হাসি, ললিতা অঙ্গ সমন্বিতা ললিতা। রাধারাণী অপেক্ষা সাতাশ দিনের জ্যেষ্ঠা।

মায়ের নাম শারদা, পিতার নাম বিশোক। পতির নাম ভৈরব। বর্ষানার দেড় মাইল উত্তর-পশ্চিম দিকে উঁচাগাঁও নামক উঁচু স্থানটি ললিতাদেবীর জন্মস্থান। শ্রাবণ মাসের শুক্লা একাদশীতে তাঁর জন্ম দয়। ললিতার অঙ্গকান্তি গোরোচনার মতো উজ্জ্বল পীতবর্ণ। তিনি প্রায়ই ময়ূর পুচ্ছ বর্ণের বসন পরিধান করেন।

তাঁর স্বভাব বামা প্রখরা। মান বিষয়ে সদা উদ্যক্তা, মানশৈথিল্যে ক্রুদ্ধা, নায়কের অবশীভূতা এবং কঠোরভাষিণী। ভাবটি বিশুদ্ধ খণ্ডিতা।

শ্রীললিতা রাধারাণীর সমস্ত সখীদের অধ্যক্ষা। রাধামাধবের যুগললীলায় সমস্ত কাজই তাঁর আয়ত্তাধীন। শ্রীশ্রীরাধামাধবের প্রেমকলহ ও সন্ধিকার্যে ইনি বিশারদা। কৃষ্ণ কখনও রাধারাণীর কাছে অপরাধ করলে কৃষ্ণের প্রতি ইনি ক্রোধে মুখ উত্তেলিত করে রাখেন। বিগ্রহ (কলহ) ও প্রৌড়িবাদ (সগর্ব বাক্য), প্রত্যুত্তর ও সিদ্ধান্ত ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিভাবান্বিত সখীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে তিনি কলহ-বিগ্রহেই বেশী আগ্রহ করেন।

রাধারাণীর দুটি শারিকা পাখি 'সূক্ষ্মধী' ও 'শুভা'-তারা রাধামাধবের লীলা অবলম্বন করে সুমধুর স্বরে বিচিত্র সুরে অদ্ভুতভাবে গাইতে থাকে। সেসব গীতের রচয়িতা ও শিক্ষিকা হচ্ছেন ললিতাদেবী।

ফুলের গয়না, ছত্র, বিছানা, চাঁদোয়া, কুঞ্জভবন ইত্যাদি নির্মাণে ললিতাদেবী বিশেষ দক্ষা। ইন্দ্রজাল (যাদু, ভেলকি) বিদ্যায় নিপুনা। প্রহেলিকা (হেঁয়ালী বা ধাঁধাঁ) রচনায় পারদর্শিনী।

তাম্বুল সেবায় 'মদনোন্মাদিনী বাটী'তে পুষ্পলতা, পানগাছ, সুপারী গাছ ইত্যাদি রক্ষণে, এবং মাল্য তৈরিতে নিযুক্ত যে সমস্ত বয়স্যা-দাসী-সখী- কন্যারা রয়েছেন, ললিতাদেবী তাঁদের সবার অধ্যক্ষা।

ললিতাদেবীর কুঞ্জ বিদ্যুৎবর্ণ। বয়স ১৪ বৎসর ৩ মাস।

ললিতাদেবীর যুথে যে অষ্টসখী রয়েছেন, তাঁরা হলেন- রত্নপ্রভা, রতিকলা, সুভদ্রা, ভদ্ররেখা, সুমুখী, ধনিষ্ঠা, কলহংসী, কলাপিণী।

ললিতাদেবী গৌরলীলায় স্বরূপদামোদর গোস্বামী।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)