শ্রীমতি চম্পকলতা সখী(অষ্টসখীর তৃতীয়া সখী)
শ্রীরাধার অপেক্ষা একদিনের ছোট চম্পকলতা। চম্পকলতার অঙ্গকান্তি ফুটন্ত স্বর্ণ চাঁপাফুলের মতো। ভাদ্র মাসের শুক্লা নবমী মঙ্গলবারে তাঁর জন্ম। পিতার নাম আরাম। মাতার নাম বাটিকা। পতির নাম চণ্ডাক্ষ। চম্পকলতা গুণে বিশাখার তুল্য। চাষপক্ষীর বর্ণের ন্যায় তাঁর বসন।
কোথায় কি ধরনের ফুল-ফল-মূল পাওয়া যায় সেই সন্ধানে তিনি পটু। চাঁপাফুলের জন্য চাঁপাহাটিতে তিনি এসেছিলেন। হাতের চাতুরীতে মাটির নানা জিনিস বানাতে তিনি সিদ্ধহস্তা। কটু, তিক্ত, কষায়, অম্ল, মধুর, লবন, এই ছয় প্রকার রসের পরীক্ষা বিষয়ে, সুরক্ষা, রান্নাশাস্ত্রে সুদক্ষা।
ফল, ফুল, মূলাদির আচার তৈরিতে সুদক্ষা। মিছরী দিয়ে বিচিত্র আকারের উৎপল বানাতে তিনি পটু। তাই তিনি মিষ্টহস্তা নামে বিখ্যাতা।
সান্ত্বনা বা প্রবোধ দিতে, অসুবিধায় সুযোগ সুবিধা করে দিতে, রহস্য
ভেদ করতে তিনি বিচক্ষণা। পরিহাসেও নিপুণা। কাউকে দেখে তাঁর হৃদয়ের ভাব বুঝতে পারদর্শিনী। কোনও কাজ করতে হলে সেই কাজের উদ্দেশ্যকে তিনি গোপন রাখেন। বাক্যযুক্তিতে তিনি বিশেষ দক্ষা। প্রতিপক্ষদের অপকর্ষ করে স্বপক্ষের উৎকর্ষ সাধনে দক্ষা। দূতীগণের কার্যকলাপ কিভাবে হবে এবং তাতে যত রকমের বাক্যরচনা করার কথা
সেই বিষয়ে নির্দেশদানে তিনি সুপণ্ডিতা।
চামর-ব্যজনাদিই চম্পকলতার নিত্য সেবা। তাঁর তপ্ত কাঞ্চনবর্ণের মনোহর কুঞ্জ রয়েছে। চম্পকলতার বয়স ১৪ বৎসর আড়াই মাস।
চম্পকলতার যুথে যে অষ্টসখী রয়েছেন তাঁরা হলেন, কুরঙ্গাক্ষী, সুচরিতা, মণ্ডলী, মণিকুণ্ডলা, চন্দ্রিকা, চন্দ্রলতিকা, কন্দুকাক্ষী ও সুমন্দিরা।
চম্পকলতা সখী গৌরলীলায় রাঘবপণ্ডিত গোস্বামী।