৪ শ্রীধর ৯ শ্রাবণ ২৫ জুলাই বৃহঃবার, কৃষ্ণ পঞ্চমী

Dvarakajivana Dasa
0


শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামীর তিরোভাব তিথি কি জয়!


শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামী ছিলেন শ্রীরঙ্গমের প্রধান পূজারী শ্রী ব্যেঙ্কট ভট্টের পুত্র। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বর্ষাকালে চাতুর্মাস্যের চার মাস সেখানে অবস্থান করেন এবং গোপাল ভট্ট তখন তাঁর সেবা করেছিলেন। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁকে বৃন্দাবনে শ্রীল রূপ গোস্বামীর সাথে মিলিত হতে বলেছেন এবং পরবর্তীতে তিনি ষড় গোস্বামীর একজন বলে পরিগণিত হন। শ্রী রাধারমণ বিগ্রহ তাঁর জন্যই প্রকট হয়েছিলেন। 


তিনি সৎক্রিয়া-সার দীপিকা গ্রন্থ রচনা করেছেন, যা বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের জন্য বৈদিক সংস্কারসূচি। গোস্বামীরূপে তিনি শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণের আরাধনা করেছেন এবং গোপীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বৃন্দাবনে কৃষ্ণের অন্বেষণে ছুটে বেড়িয়েছেন, পাশাপাশি তিনি এই সংস্কারসমূহ সম্পর্কে লেখার ক্লেশ স্বীকার করেছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভক্তদের জন্য এই সংস্কারসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা উপলব্ধি করে তিনি এই মূল্যবান গ্রন্থসমূহ রচনা করেছেন। তিনি গৃহস্থদের নির্দেশনা দিয়েছেন কিভাবে গর্ভাধান সংস্কার, জন্ম সংস্কার, বিবাহ যজ্ঞ ইত্যাদি সম্পাদন করতে হয়। এই গ্রন্থে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে সবকিছু কৃষ্ণভাবনাময় উপায়ে করা উচিত এবং এই অনুষ্ঠানসমূহ দেবদেবীদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং কেবল শ্রীবিষ্ণুর প্রীতিবিধানের জন্যই আমাদের করা উচিত। 


তো আজ একটি বিশেষ দিন, যেদিনে শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামী এই জড়জগৎ থেকে অপ্রকট হয়েছেন। বলা হয়ে থাকে যে, ষড় গোস্বামীকে স্মরণ করার মাধ্যমে আপনারা সকল প্রকার বাধা অতিক্রম করতে পারেন।


শ্রীল জয়পতাকা স্বামী মহারাজের অ্যাপ বার্তা - ২৫শে জুলাই, ২০২৪



 ৪ শ্রীধর ৯ শ্রাবণ ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার, কৃষ্ণ পঞ্চমী:


শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামীর তিরোভাব তিথি!

কিভাবে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু গোপাল ভট্ট গোস্বামীর নিকট নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন:

গোপাল ভট্ট ছিলেন ভগবান শ্রী রঙ্গনাথের প্রধান পূজারী শ্রীব্যেঙ্কট ভট্টের কনিষ্ঠ পুত্র। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁদের (শ্রী গোপাল ভট্টের) গৃহের অপর প্রান্তে অবস্থান করছিলেন। তিনি প্রতিদিন তাঁদের গৃহে গিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করতেন। ব্যেঙ্কট ভট্ট তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র গোপাল ভট্টকে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবায় নিয়োজিত করেছিলেন এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বর্ষাকালের চারমাস সেখানেই থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন।

তো, গোপাল ভট্ট ভাবলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে তাঁর পার্ষদবর্গসহ দর্শন কতই না সৌভাগ্যের ব্যাপার হবে। কিন্তু যেহেতু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু একজন সন্ন্যাসী ছিলেন, তাই তাঁর সাথে শুধুমাত্র একজন সহযোগী ছিলেন, তো এই ভেবে গোপাল ভট্ট ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে অনেক পার্ষদবর্গের সহিত দর্শন করলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁকে আহ্বান করলেন, "গোপাল, গোপাল, গোপাল" এবং তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যেখানে ছিলেন সেখানে দৌড়ে গেলেন। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর স্বরূপ পরিবর্তন করলেন। তখন তিনি অনেক গোপবালকসহ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণে রূপান্তরিত হলেন। গোপাল ভট্ট তখন তাঁকে প্রণতি নিবেদন করলেন এবং উঠে দেখলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সেখানে নেই। তিনি ছিলেন কৃষ্ণ এবং তিনি তাঁকে অনেক পার্ষদবর্গসহ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুরূপে দর্শন করেছিলেন। হরে কৃষ্ণ! হরিবোল! তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এবং মহাপ্রভু তাঁর কাছে নিজেকে কৃষ্ণের অবতাররূপে প্রকাশ করেছিলেন।


শ্রী গোপাল ভট্টের অবদান: শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু গোপাল ভট্ট গোস্বামীকে বৃন্দাবনে শ্রীরূপ গোস্বামীর সাথে মিলিত হওয়ার নির্দেশ দান করেছিলেন এবং পরে তিনি ষড় গোস্বামীদের অন্যতম একজন হন। শ্রীরাধারমণ বিগ্রহ তাঁর জন্য প্রকট হয়েছিলেন। সংস্কার লিপিকার সমস্ত সংস্কারগুলি গোপাল ভট্ট গোস্বামী কর্তৃক প্রদানকৃত। তো আমাদের শুদ্ধিকরণ আচার-অনুষ্ঠানগুলি অনেকটাই শ্রী সম্প্রদায়ের মতো। আমরা ষড় গোস্বামীগণকে স্মরণ করতে পারি "বন্দে রূপ-সনাতনৌ রঘুযুগৌ শ্রীজীব গোপালকৌ" এই শ্রীশ্রীষড়গোস্বামী অষ্টক কীর্তন করার মাধ্যমে।

আজ একটি বিশেষ দিন, কেননা আজকের দিনেই শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামী এই জড়জগৎ থেকে তিরোধান করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে, ষড়গোস্বামীগণকে স্মরণ করার মাধ্যমে আপনারা যেকোনো রকমের বাধা অতিক্রম করতে সমর্থ হবেন। গোপাল ভট্ট গোস্বামী ছিলেন তামিলনাড়ুর অধিবাসী। তিনি ষড় গোস্বামীগণের একজন। সেইজন্যই শ্রীল প্রভুপাদ এবং তাঁর গুরুদেব শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর দক্ষিণ ভারতের মহিমাকীর্তন করেছেন।

~শ্রীল জয়পতাকা স্বামী, 

২রা আগস্ট, ২০১৮

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)